সন্ধা সাতটা। ঘুম থেকে উঠার পর বারান্দায় আসলাম। প্রতিদিনকার মত প্রকৃতিকে একটু সময় দেয়া, হাই বলা। উৎসাহ নিয়ে ঘন সবুজের দিকে তাকিয়ে তাকা।
হঠাৎ করে ঝড়ো হাওয়া বইতে লাগল। উড়িয়ে দিতে চাইল সবকিছু। অসচেতন লোকজনের বাইরে নেড়ে দেয়া জামাকাপড় সব উড়িয়ে নিয়ে ফেলতে লাগল যেখানে খুশী। দরজা জানালা দিয়ে তীব্রভাবে বয়ে আসতে লাগল ধূলো ময়লা। আমি দরজা জানালা লাগিয়ে দিয়ে বাইরে এসে দেখতে লাগলাম কান্ডকারখানা। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আকাশে গর্জন এবং হঠাৎ করে ঝুম বৃষ্টি। এরকম বৃষ্টির নাম দিয়েছিলাম আমি সারপ্রাইজ বৃষ্টি, যে বৃষ্টি মাঝে মাঝে আমাদের সারপ্রাইজ দিতে চায়।
বৃষ্টি থেমে গেল। ৯টার দিকে আমি নিচে নামলাম। ক্যান্টিনের সামনে গিয়ে এত আলো দেখে পেছনে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি এক প্রকান্ড আগুন ঠিক আমাদের হলের পেছনে। দাউ দাউ করে জ্বলছে। সবাই আগুন আগুন চিৎকার করে সামনের দিকে দৌড়ে পালাচ্ছে। ফজলুল হক হলের ছাত্ররা ভেবেছে আমাদের হলে আগুন লেগে গেছে। এত বড় আগুনের ফুল্কি কেউ আগে দেখে নি! বড় বড় সব বহুতল ভবনের চূড়া ডিঙিয়ে অসীম স্পর্ধা নিয়ে বিপুল উৎসাহে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। চারপাশের সবকিছু আলোকিত হয়ে গেছে। মানুষজন নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে নিরাপদ অনুভব করার পর বিস্ময় নিয়ে ভাবছে ঠিক কোথায় লেগেছে এই ধ্বংসাত্মক ভয়ংকর আগুন।
হঠাৎ করে ঝড়ো হাওয়া বইতে লাগল। উড়িয়ে দিতে চাইল সবকিছু। অসচেতন লোকজনের বাইরে নেড়ে দেয়া জামাকাপড় সব উড়িয়ে নিয়ে ফেলতে লাগল যেখানে খুশী। দরজা জানালা দিয়ে তীব্রভাবে বয়ে আসতে লাগল ধূলো ময়লা। আমি দরজা জানালা লাগিয়ে দিয়ে বাইরে এসে দেখতে লাগলাম কান্ডকারখানা। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আকাশে গর্জন এবং হঠাৎ করে ঝুম বৃষ্টি। এরকম বৃষ্টির নাম দিয়েছিলাম আমি সারপ্রাইজ বৃষ্টি, যে বৃষ্টি মাঝে মাঝে আমাদের সারপ্রাইজ দিতে চায়।
বৃষ্টি থেমে গেল। ৯টার দিকে আমি নিচে নামলাম। ক্যান্টিনের সামনে গিয়ে এত আলো দেখে পেছনে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি এক প্রকান্ড আগুন ঠিক আমাদের হলের পেছনে। দাউ দাউ করে জ্বলছে। সবাই আগুন আগুন চিৎকার করে সামনের দিকে দৌড়ে পালাচ্ছে। ফজলুল হক হলের ছাত্ররা ভেবেছে আমাদের হলে আগুন লেগে গেছে। এত বড় আগুনের ফুল্কি কেউ আগে দেখে নি! বড় বড় সব বহুতল ভবনের চূড়া ডিঙিয়ে অসীম স্পর্ধা নিয়ে বিপুল উৎসাহে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। চারপাশের সবকিছু আলোকিত হয়ে গেছে। মানুষজন নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে নিরাপদ অনুভব করার পর বিস্ময় নিয়ে ভাবছে ঠিক কোথায় লেগেছে এই ধ্বংসাত্মক ভয়ংকর আগুন।
আমাদের হলের পেছনে চানখারপুল মোড়ে একটি পেট্রোল পাম্প আছে। আমি প্রথমটায় ভাবলাম সেটাতে বুঝি আগুন লেগেছে। পেট্রোল পাম্পের সামনে গিয়ে দেখি সেটাতে কিছুই হয় নি। আগুন আরো পিছনে। চানখারপুলের রাস্তার ওপাশের ভবনগুলোতেও নয়, আরো ওপাশে। চানখারপুলের ভিতরে নিমতলীতে।
কত বড় ধরনের অগ্নিকান্ড হলে সেটা এত দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যায় এবং দূরত্বকে ভ্রম করে দেয়! ঘটনাস্হলে গিয়ে শুনলাম প্রায় শ’খানেকের ওপর লোক মারা গেছে। শোকাগ্রস্হ পুলিশ, শোকাগ্রস্হ মানুষজন তাকিয়ে দেখছে সামনের ঘটে যাওয়া সব অবিশ্বাস্য দৃশ্য। একটি একটি করে লাশ উদ্ধার করে গাড়িতে তুলা হচ্ছে। ঝামেলা এড়াতে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
লোকজন এসে পুলিশকে অনুরোধ করছে। “আমার আত্মীয় আগুনে পুড়ে গেছে। আমি কি একটু দেখতে পারি ওখানে আছে কিনা?”
পাশেই ঢাকা মেডিকেলে গাড়ি করে চলে যাচ্ছে মৃত সব মানুষের দল একটু আগেও নাকি তারা জীবন্ত ছিল। ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরিত হয়ে যখন গ্যাসলাইনে আগুন ধরে সে এক তীব্র আকার ধারণ করল ততক্ষণে সবমানুষ বের হতে পারল না। অনেকে এত ক্ষুদ্র সময়ে টেরই পেল না। কিন্তু আটকা পড়ে গেল। কেউ অক্সিজেনের অভাবে দমবন্ধ হয়ে মারা গেল আর কেউ পুড়ে।
বস্তির মত পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকা ৪-৫টি ভবনে লেগেছে আগুন। তার মাঝে আমাদের মত মানুষ ছিল। আমাদের মত জীবন। অনেক জীবন ঝড়ে গেছে। মুহূর্তের মাঝে বন্ধ হয়ে গেছে আগুনের মাঝে ঝলসে যাওয়া সব চিৎকার! শেষ হয়ে গেছে জীবনের সব টেনশন।
কত তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কত সিরিয়াস আমরা! লক্ষে পৌঁছানোর টেনশানে হয়ে যেতে চাই কখনো নি:শেষ। তুচ্ছ প্রেমের জন্য কতজনই তো দিয়ে দিতে চায় জীবন। অথচ জীবন একবারই আসে বারবার নয়।
ঢাকা শহর তো বসবাসের অনুপযোগী বেশ আগে থেকেই। একটি বড় ভূমিকম্প হলে কি পরিণতি দাঁড়াবে তা কল্পনাতীত! অপরিকল্পিত স্হাপনা এবং অনিরাপদ জীবনব্যবস্হার সংস্কৃতি চলতে থাকলে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে বারবার। হুজুরের মত পরিহিত একজন লোক বলছিলেন এভাবে যারা মারা গেল তারা তো শহীদ, বেহেস্ত গেল! একবারের জন্য মনে হল বাহ! বেহেস্ত যাওয়া তো খুব সোজা। পরে মনে হল থাক দরকার নাই। ধর্মীয় কুসংস্কার অপেক্ষা জীবনের মূল্য অনেক বেশী।
কত বড় ধরনের অগ্নিকান্ড হলে সেটা এত দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যায় এবং দূরত্বকে ভ্রম করে দেয়! ঘটনাস্হলে গিয়ে শুনলাম প্রায় শ’খানেকের ওপর লোক মারা গেছে। শোকাগ্রস্হ পুলিশ, শোকাগ্রস্হ মানুষজন তাকিয়ে দেখছে সামনের ঘটে যাওয়া সব অবিশ্বাস্য দৃশ্য। একটি একটি করে লাশ উদ্ধার করে গাড়িতে তুলা হচ্ছে। ঝামেলা এড়াতে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
লোকজন এসে পুলিশকে অনুরোধ করছে। “আমার আত্মীয় আগুনে পুড়ে গেছে। আমি কি একটু দেখতে পারি ওখানে আছে কিনা?”
পাশেই ঢাকা মেডিকেলে গাড়ি করে চলে যাচ্ছে মৃত সব মানুষের দল একটু আগেও নাকি তারা জীবন্ত ছিল। ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরিত হয়ে যখন গ্যাসলাইনে আগুন ধরে সে এক তীব্র আকার ধারণ করল ততক্ষণে সবমানুষ বের হতে পারল না। অনেকে এত ক্ষুদ্র সময়ে টেরই পেল না। কিন্তু আটকা পড়ে গেল। কেউ অক্সিজেনের অভাবে দমবন্ধ হয়ে মারা গেল আর কেউ পুড়ে।
বস্তির মত পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকা ৪-৫টি ভবনে লেগেছে আগুন। তার মাঝে আমাদের মত মানুষ ছিল। আমাদের মত জীবন। অনেক জীবন ঝড়ে গেছে। মুহূর্তের মাঝে বন্ধ হয়ে গেছে আগুনের মাঝে ঝলসে যাওয়া সব চিৎকার! শেষ হয়ে গেছে জীবনের সব টেনশন।
কত তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কত সিরিয়াস আমরা! লক্ষে পৌঁছানোর টেনশানে হয়ে যেতে চাই কখনো নি:শেষ। তুচ্ছ প্রেমের জন্য কতজনই তো দিয়ে দিতে চায় জীবন। অথচ জীবন একবারই আসে বারবার নয়।
ঢাকা শহর তো বসবাসের অনুপযোগী বেশ আগে থেকেই। একটি বড় ভূমিকম্প হলে কি পরিণতি দাঁড়াবে তা কল্পনাতীত! অপরিকল্পিত স্হাপনা এবং অনিরাপদ জীবনব্যবস্হার সংস্কৃতি চলতে থাকলে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে বারবার। হুজুরের মত পরিহিত একজন লোক বলছিলেন এভাবে যারা মারা গেল তারা তো শহীদ, বেহেস্ত গেল! একবারের জন্য মনে হল বাহ! বেহেস্ত যাওয়া তো খুব সোজা। পরে মনে হল থাক দরকার নাই। ধর্মীয় কুসংস্কার অপেক্ষা জীবনের মূল্য অনেক বেশী।
সেইন্ট আতিক
৩ জুন ২০১০
৩ জুন ২০১০
No comments:
Post a Comment